1. shahalom.socio@gmail.com : admin :
  2. smds69@gmail.com : কারেন্ট নিউজ : কারেন্ট নিউজ
বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:১৮ অপরাহ্ন

আমিনুল কান্ডে তছ-নছ ঢাকা উত্তর বিএনপি !

  • আপডেট করা হয়েছে মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে

কারেন্ট নিউজ প্রতিবেদনঃ

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি নিয়ে বিতর্ক থামছেই না। বির্তকের সূত্রপাত করেছেন মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক। আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে নেতা বানানো এবং ছাত্রদল-যুবদল করে আসা পুরনো নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনে সরাসরি হস্তক্ষেপের মত বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রেসিডেন্ট করার আশ্বাসে বহুল আলোচিত ও বির্তকিত দূর্নীতিবাজ ব্যাবসায়ী সাইফ পাওয়ার টেকের মালিক এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ক্যাশিয়ার খ্যাত রুহুল আমিন তরফদার এর কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নেওয়া, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কমিটি নিয়ন্ত্রণ বা দখলের চেষ্টা, নেতার মধ্যে রেষারেষি এবং থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে মতভেদের কারণে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্রমতে, চলতি বছরের ৭ জুলাই যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরবকে আহ্বায়ক ও বিএনপির ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হককে সদস্যসচিব করে দুই সদস্যের আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মহানগর উত্তর বিএনপিতে তৈরি হয় নতুন বিতর্ক ও সংকট। আমিুলের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঁদাবাজি ও দখলদারত্বের অভিযোগ হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়তে থাকে। মিরপুরসহ মহানগর উত্তরের বিভিন্ন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি এবং গার্মেন্টস সেক্টরে দলীয় লোকজন নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন তিনি।

উত্তরে আমিনুলের নিজ বলয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে জানা যায়, সরাসরি তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে এগুনোর চেষ্টা করছেন আমিনুল। অভিযোগ আছে, নিজ বলয় বৃদ্ধি করতে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে রীতিমতো ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি।
আমিনুলনামা:

১. বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রেসিডেন্ট করার আশ্বাসে বহুল আলোচিত ও বির্তকিত দূর্নীতিবাজ ব্যাবসায়ী সাইফ পাওয়ার টেকের মালিক এবং স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ক্যাশিয়ার খ্যাত রুহুল আমিন তরফদার এর কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নেওয়া, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কমিটি নিয়ন্ত্রণ বা দখলের চেষ্টা, নেতার মধ্যে রেষারেষি এবং থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে মতভেদের কারণে কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

২.পল্লবী থানা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি ও ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন। কয়েক দিন আগে সাজ্জাদ হোসেন কাউন্সিলর সাথে আমিনুলের ২ নং ওয়ার্ডের সমস্ত ময়লার টাকা নিয়ে একটি সমঝোতা হয়। সাজ্জাদ কাউন্সিলর বহিষ্কৃত হওয়ার আগেই থেকে সে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত ও সব অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।

৩. মনিরুজ্জামান সোহাগ বড় ব্যবসায়ী এবং ঢাকা ১৬ আসনের সাবেক সংসদ ইলিয়াস মোল্লার অর্থ যোগান দাতা। কিছুদিন আগে ‌আমিনুলের কর্মী নজরুল ইসলাম নজু ও সোহাগ সহ আরও কিছু সন্ত্রাসী মিরপুর ১০ নং এ অবস্থিত ‘শহীদ আবু তালেব’ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় প্রধান শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে স্কুলের প্রতিনিধিরা আমিনুলের কাছে অভিযোগ করেন কিন্তু তিনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

৪. মোস্তফা মাস্টার, সভাপতি, ২ নং ওয়ার্ড, বিএনপি, পল্লবী, তার নেতৃত্বে হেলাল সহ কিছু সন্ত্রাসী ২ নং ওয়ার্ডের ডি ব্লকের একটি বাসায় এক মহিলার কাছে দশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় ঐ মহিলাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। মোস্তফা মাস্টার আমিনুল সাহেব এর খুব ঘনিষ্ঠ ও অর্থ যোগান দেয়।

৫. পল্লবীর ৬ নং ওয়ার্ডের ময়লা পরিষ্কার করার দায়িত্বে থাকা এক মহিলার কাছে মহানগর উঃ বিএনপির সাবেক সদস্য, সাবেক সভাপতি, পল্লবী থানা স্বেচ্ছাসেবক দল ও বর্তমানে আমিনুল ইসলামের একান্ত সহযোগী মাহাবুবুর রহমান মন্টু সে এবং তার লোকজন ঐ মহিলার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, তার মধ্যেপঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকি দেড় লাখ টাকা কয়েক দিনের মধ্যে দিতে বলেছে। এই অভিযোগ টা যমুনা টেলিভিশন কে ঐ মহিলা এবং ঐ মহিলার ভাই সাক্ষাৎকার দিয়েছে এবং যমুনা টেলিভিশন অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তি মাহবুবুর রহমান মন্টুর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

৬.বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার প্রধান মাস্টারমাইন্ড ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর এর সভাপতি ও ছাত্র গনহত্যার অন্যতম কারিগর সৈয়দ মিজানুর রহমান মিজান এর সাথে ঢাকা মহানগর উত্তর বি এন পির সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হকের রয়েছে গভীর সখ্যতা।

দলীয় সূত্রগুলো বলেছে, বিগত আমান উল্লাহ আমান ও আমিনুল হক কমিটিতেও বির্তকের শীর্ষে ছিলেন আমিনুল হক । দখলবাজি, চাঁদাবাজি, আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে নেতা বানানো প্রতিটি থানা কমিটিতে বিশেষ কোটায় ভোলার লোক ঢোকানো হয়েছে। কমিটি গঠনে এসব অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রভাব পড়েছে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও।

২০২৩ সালের, আন্দোলনেও নিরব ভুমিকায় ছিল ঢাকা মহাগর উত্তর বিএনপি, এবং সফল কোন ভূমিকায় দেখা যায়নি। প্রতিটি কর্মসূচিতে ভয়ানকভাবে ‘ফ্লপ’ ছিল ঢাকা মহাগর উত্তর বিএনপি।

এদিকে নগর উত্তর বিএনপির থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, উত্তরের ২৬টি থানা এবং ৭১ ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় সম্পূর্ণ নতুন কিছু লোককে কমিটিতে আনা হয়েছে। যাদের অধিকাংশের বাড়ি ভোলায়। তাদের নেতা বানাতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন সদস্য সচিব আমিনুল।

গত বছরের ১০ ডিসেম্বর গোলাপবাগের সমাবেশ মঞ্চে আমিনুলের সঙ্গে ছাত্রদল সভাপতি শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েলের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আলাদাভাবে স্কাইপ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে একত্রিতভাবে আমিনুলের স্বেচ্ছাচারিতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ করেন। এত অভিযোগ থাকার সত্তেও অদৃশ্য ক্ষমতা বলে আবারও ২য় সদস্য সচিব করা হয় তাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি ও ঢাকা মহানগরের শীর্ষ নেতারা কমিটি ভাঙার পেছনে মোটা দাগে পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতারা জানান,

শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক চাঁদাবাজি ও দখলদারত্বের অভিযোগ হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়তে থাকে। মিরপুরসহ মহানগর উত্তরের বিভিন্ন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি এবং গার্মেন্টস সেক্টরে দলীয় লোকজন নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছেন আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ নেতারা।

আরেকটি সূত্রের দাবি, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পেছনে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে নীরব ও আমিনুল হক একে অপরের বিরুদ্ধে বিচার দিতেন। যদিও তারা দুজনই পরস্পরের নিকটাত্মীয়। কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকেই আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব কেউ কাউকে কোনো সহযোগিতা করতেন না বলে মহানগর নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা আছে। আহ্বায়কের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের যোগাযোগও ঠিকমতো ছিল না, একধরনের বিভাজন তৈরি হয়েছিল। থানা এবং ওয়ার্ড কমিটির পুনর্গঠন নিয়েও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এ ছাড়া সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের দলে অনুপ্রবেশ করানোরও অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কমিটি ভেঙে দিতে অনেকটাই বাধ্য হয়েছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

কমেন্ট করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
Theme Customized By BreakingNews